পুরুষের চেয়ে মহিলারাই বেশি ভোগেন থাইরয়েডের সমস্যায়। অন্তত তেমনই মনে করে আমেরিকান থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশন (এটিএ)। তারা জানাচ্ছে, যদি প্রতি ১০০ জনের মধ্যে এক জন পুরুষ থাইরয়েড আক্রান্ত হন, তবে মহিলাদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫-৮। কেন মহিলারাই থাইরয়েডে বেশি ভোগেন, সে কারণও জানিয়েছেন গবেষকেরা।
এর কারণই হল হরমোনাল ইমব্যালেন্স। মহিলাদের শরীরের দুই হরমোন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের ক্ষরণে তারতম্য হলে, তখন থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দেয়। আমেরিকান থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ যদি অত্যধিক মাত্রায় হয়, তা হলে থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা কমে যায়। তখনই সমস্যার সূত্রপাত হয়।
গলার সামনের দিকে অবস্থিত থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত টি-থ্রি ও টি-ফোর হরমোন শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন— বিপাকক্রিয়া, শরীরের বৃদ্ধি ও গঠন, বুদ্ধির বিকাশ, হৃদস্পন্দন, ঋতুচক্র ও গর্ভধারণ।
এই হরমোনগুলোর মাত্রা যদি খুব বেশি বেড়ে যায় বা খুব কমে যায়, তখনই থাইরয়েডের সমস্যা তৈরি হয়। যখন হরমোনের মাত্রা কমে যায়, তখন তাকে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিজম।
আর যদি সময়মতো এর চিকিৎসা না হয়, তাহলে শরীরের সামগ্রিক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে অন্য রোগেরও ঝুঁকি বেড়ে যায়।
থাইরয়েড হরমোন শুধু বিপাক নয়, হৃদযন্ত্রের কার্যক্রমও প্রভাবিত করে। এই হরমোন ঠিক করে দেয়, হৃদস্পন্দনের গতি কতটা হবে। ফলে, থাইরয়েডের সমস্যার সঠিক চিকিৎসা না হলে হার্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। যেমন :
সুষম খাদ্য গ্রহণ
নিয়মিত শরীরচর্চা
যথাসময়ে ওষুধ গ্রহণ
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হলে অবশ্যই নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ ও রক্তপরীক্ষা করা জরুরি। কারণ একবার ভারসাম্য হারালে, শরীরের সামগ্রিক সুস্থতাই বিঘ্নিত হতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার