ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার প্রভাবে বৃষ্টি ও বন্যায় ব্যাপক বিপর্যয়ের মুখে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েক জরুরি আইন জারি করেছেন। তিনি ক্ষয়ক্ষতির মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৩২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে, আর ১৭৬ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, এই দুর্যোগে প্রায় ১৫ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ৪৪ হাজার মানুষকে আশ্রয় নিতে হয়েছে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে। জানা যায়, শনিবার ডিটওয়াহ ভারতের উত্তরাঞ্চলের দিকে সরে গেছে। তবুও শ্রীলঙ্কায় এর তাণ্ডব থামেনি। এদিন রাজধানী কলম্বো থেকে ১১৫ কিলোমিটার দূরের জেলা ক্যান্ডিতে নতুন করে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। সেখানে পানির নিচে চলে গেছে প্রধান সড়কের বেশ কয়েকটি অংশ।
ডিএমসি মহাপরিচালক সম্পথ কটুওয়েগোডা জানান, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর হাজারো সদস্যকে মাঠে নামানো হয়েছে, যার ফলে ত্রাণ তৎপরতা আরও জোরদার হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা রেড ক্রস সোসাইটির মহাসচিব মাহেশ গুনাসেকারা জানিয়েছেন, বহু মানুষ এখনো বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় আটকে আছেন এবং তাদের কাছে পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। তিনি বলেন, ‘ত্রাণের চাহিদা বাড়ছে। পানি ক্রমাগত বাড়ছে। ঝড়টি ধীরে ধীরে সরে গেলেও আমাদের দুর্ভোগ এখনো কাটেনি।’
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় কলম্বো থেকে ভারত মহাসাগরে প্রবাহিত কেলানি নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় নদী উপচে পড়লে শত শত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয় বলে জানায় ডিএমসি।
এদিকে প্রবল এই দুর্যোগের মুখে শ্রীলঙ্কা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি বিদেশে থাকা শ্রীলঙ্কানদেরও নগদ সহায়তা পাঠানোর অনুরোধ করেছে। সরকারি এক কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রী হারিনি আমারাসুরিয়া বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সরকারগুলোর সহায়তা চেয়েছেন।
ইতোমধ্যে প্রতিবেশী ভারত দুটি বিমানে করে ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে। পাশাপাশি আগে থেকেই কলম্বোয় অবস্থানরত ভারতীয় একটি যুদ্ধজাহাজ তার মজুত রসদ ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।