দেবদারু হাটে প্রতিদিন বিক্রি হয় ২০ লাখ টাকার জলপাই

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে দেবদারু তলায় বসা জলপাই হাট সারা মৌসুম জুড়েই জমজমাট। চাষিদের বাগান থেকে জলপাই সংগ্রহ করে আড়ত দারের কাছে বিক্রি করে জীবিকা চলছে এলাকার হাজারো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। দেশের সর্ববৃহৎ এই জলপাই হাটে আমদানি করা জলপাই চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন চালান ক্ষেত্রে। আকার, মান ও গুনের কারণে চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। চাহিদা এবং লাভজনক হবার কারণে প্রতি বছর জলপাই বাগানের পরিধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে এলাকায়।

মৌসুম আসার আগেই বাগান মালিকদের আগাম জামানত দিয়ে বাগান কিনে থাকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। ফল পরিপক্ব হলে নিজেরাই বাগান থেকে ফল তুলে তা নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের আড়তে। ফলে কোনো বিড়ম্বনাই থাকছে না এলাকার চাষিদের। 

ব্যাপক আকারে জলপাই, জাম্বুরা, কলা পেঁপেসহ নানা মৌসুমি ফলের বড় বাজার দেবীগঞ্জে এই দেবদারু তলা। চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে উত্তরের এই জনপদের মানুষের গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন মাইলফলক গড়ে তোলা সম্ভব। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে দেবীগঞ্জের এই দেবদারু তলায় জলপাইসহ নানা মৌসুমি ফল বিক্রির উৎসব। প্রতিদিন গড়ে ২০ লাখ টাকার জলপাই বিক্রি হচ্ছে এখান থেকে। প্রতি কেজি জলপাই প্রকার ভেদে ১৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেবীগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ টন জলপাই কেনা বেচা হয়ে থাকে। প্রায় হাজার খানেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জলপাই কিনে বাইরের থেকে আসা ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করেন। এসব পণ্য পরিবহনে ট্রেন ও সড়ক পথে সুবিধা থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে জলপাই কিনতে ব্যবসায়ীরা।

আশ্বিনের শুরু থেকে জলপাই বাজারে আসা শুরু করেছে, চলবে পুরো পৌষ এবং মাঘ পর্যন্ত। লাভজনক এবং বিপণন সুবিধা থাকায় বাড়ছে বাগানের পরিধি ফলে দেবীগঞ্জসহ আশে পাশের অনেক বেকার কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

দেবীগঞ্জ এলাকার জলপাই বাগানি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি জলপাই আবাদ করে বাজার জাত করে আসছেন, ঝুঁকি এবং পরিচর্যা ছাড়াই প্রতি বছরে মৌসুম কালীন সময়ে জলপাই বিক্রি করে যে অর্থ তিনি আয় করেন তা দিয়ে তার বছরের খরচ পার হয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা থেকে জলপাই কিনতে আসা নাজমুল হক জানান, এই এলাকার জলপাই সাইজ স্বাদে ভালো হবার কারণে বাজারে এর চাহিদা অনেক। মৌসুমের পুরো সময় জুড়েই দেবীগঞ্জ থেকে জলপাই কিনে দেশের বিভিন্ন চালান ক্ষেত্রে বিক্রি করেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মতিন জানান, দেবীগঞ্জে রয়েছে জলপাইর ছোট-বড় অসংখ্য বাগান। আরও নতুন নতুন জলপাইর বাগান গড়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এর চাহিদা থাকায় এবং ভালো দাম পাওয়ায় এলাকার চাষিদের মধ্যে বাগান গড়ে তোলার প্রবণতা বাড়ছে। চলতি বছর ইট ভাটার ধোঁয়ার কারণে ফলন কিছুটা বিপর্যস্ত হয়েছে। তার পরেও চাষিরা আশাতীতভাবে লাভের মুখ দেখবে।

অর্থকরী ফসলের পাশাপাশি, ড্রাগন, মাল্টা, কমলালেবু পেয়ারা জাম্বুরা এবং জলপাই চাষে আশাতীত সাফল্য থাকায় চাষিদের এসব ফলের চাষ করতে কৃষি বিভাগের তদারকি বাড়ানো হয়েছে।


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজ থেকে কলেজ ও প্রাথমিকে ঈদের ছুটি শুরু

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম হঠাৎ উত্থান-পতন

শাকিব-নিশো বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন রায়হান রাফী

সীমান্তের শুন্যরেখায় শেষবারের মতো মৃত মায়ের মুখ দেখল বাংলাদেশের দু্ই মেয়ে।

৩০ দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শুরু

মহার্ঘ্য ভাতা নয়, বিশেষ প্রণোদনাই পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা

ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ জমা দিলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, নিহত তিন

বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থ উপদেষ্টা

সিকৃবির ৬ হলের নাম পরিবর্তন

১০

টুং টাং শব্দে মুখরিত কামারপট্টি

১১

প্রকৃতির খুব কাছে থাকতে চাই : বুবলী

১২