দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং উদ্ভূত নানা ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ‘অত্যন্ত জরুরি’ হয়ে পড়েছে। এই বাস্তবতায় অধস্তন আদালতসমূহে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমকে চিঠি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ চিঠি দেন।
'দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের অধস্তন আদালতসমূহে নিরাপত্তা জোরদারকরণ ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধান গ্রহণ প্রসঙ্গে' শীর্ষক ওই স্মারকে বলা হয়, বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। অধস্তন আদালতসমূহে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ জনগণের উপস্থিতিতে বিচারকার্য পরিচালিত হয়ে থাকে। বর্তমান দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে আইনজীবী ছাড়া অন্য বিচারপ্রার্থী বা বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মিছিল, সমাবেশ, অস্ত্র বা বিস্ফোরক বহন এবং মাদকদ্রব্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের আলোকে অধস্তন আদালতগুলোতেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইজিপিকে ৫টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে:
১. প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ: আদালত প্রাঙ্গণ ও এজলাস কক্ষে প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
২. নজরদারি: বিচারপ্রার্থী ও দর্শনার্থীদের গতিবিধি তদারকি করা।
৩. নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড: আদালত এলাকায় যে কোনো প্রকার সমাবেশ, মিছিল এবং বৈধ-অবৈধ অস্ত্র বা নিষিদ্ধ সামগ্রী বহন রোধ করা।
৪. বিচারকদের নিরাপত্তা: বিচারকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং তাদের সরকারি ও ব্যক্তিগত বাসভবনের নিরাপত্তা জোরদার করা।
৫. পুলিশ ও গোয়েন্দা: আদালত পাড়ায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিচারকার্য নির্বিঘ্ন, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরিচালনার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ইউনিটগুলোকে দ্রুত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।