ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে আয় করার স্বপ্ন আজ অনেকেরই। কিন্তু শুধু চ্যানেল খুলে কনটেন্ট দিলেই আয় আসবে না। ইউটিউবের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত ও নীতিমালা রয়েছে, যা পূরণ করলেই আপনি চ্যানেল মনিটাইজ করতে পারবেন—মানে ভিডিও থেকে টাকা রোজগার শুরু করতে পারবেন।
এই গাইডে সহজভাবে জানানো হলো—নতুন ইউটিউবাররা কীভাবে ধাপে ধাপে মনিটাইজেশনের যোগ্যতা অর্জন করবেন, কী কী নিয়ম মানতে হবে, আর কোন ভুলে চ্যানেলের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
ইউটিউব মনিটাইজেশনের দুটি ধাপ থাকে:
১. পূর্ণ মনিটাইজেশন (Ad Revenue পেতে চান?)
এর জন্য নিচের দুটি পদ্ধতির যে কোনো একটিতে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে:
- ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার
- শেষ ১২ মাসে ৪,০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম
অথবা
- শেষ ৯০ দিনে ১ কোটি Shorts ভিউ
এই শর্ত পূরণ করলে আপনি ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে (YPP) আবেদন করতে পারবেন এবং ভিডিওতে অ্যাড লাগিয়ে আয় করতে পারবেন।
২. প্রাথমিক মনিটাইজেশন (শুরুতে কিছু আয় করতে চান?)
নতুন বা ছোট চ্যানেলের জন্য ইউটিউব কিছু ফিচার আগেই চালু করে দেয়। যেমন:
- সুপার চ্যাট
- সুপার স্টিকারস
- চ্যানেল মেম্বারশিপ ইত্যাদি।
এগুলো পেতে হলে আপনার দরকার হবে:
- কমপক্ষে ৫০০ সাবস্ক্রাইবার
- গত ৯০ দিনে অন্তত ৩টি পাবলিক ভিডিও আপলোড
- শেষ ১২ মাসে ৩,০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম
অথবা
- শেষ ৯০ দিনে ৩০ লাখ Shorts ভিউ
টিপস: মনিটাইজেশন সুবিধা সব দেশে পাওয়া যায় না। তাই আপনার দেশ ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে রয়েছে কি না, তা আগে যাচাই করে নিন।
আবেদনের আগে এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করুন:
আপনার কনটেন্ট যেন হয় মূল (Original) ও পরিষ্কার (Ad-friendly)। না হলে ইউটিউব মনিটাইজেশন অনুমোদন দেবে না। আরও মনে রাখবেন—বেআইনি, সহিংসতা, ঘৃণা, ক্লিকবেইট থাম্বনেইল—এসব একদম নয়।
গুগল অ্যাডসেন্স ও টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন লাগবেই:
চ্যানেল থেকে আয় পেতে হলে আপনাকে একটি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং গুগল অ্যাকাউন্টে ২-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করতে হবে।
আবেদন করার পর কত সময় লাগে?
মনিটাইজেশনের যোগ্যতা পূরণ করার পর আবেদন করতে পারবেন। ইউটিউব সাধারণত ৩০ দিনের মধ্যে আপনার আবেদন রিভিউ করে জানায়।
না হলে ৩০ দিন পর আবার আবেদন করতে পারবেন। একাধিকবার ব্যর্থ হলে ৯০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
যা করলে মনিটাইজেশন বাতিল হয়ে যেতে পারে:
- ৬ মাস ধরে কোনো নতুন ভিডিও না দিলে
- ফেক সাবস্ক্রাইবার বা চুরি করা কনটেন্ট
- ৩টি কমিউনিটি গাইডলাইন স্ট্রাইক
মনে রাখবেন, চ্যানেল খুললেই আয় আসবে না—নিয়মিত ও মানসম্পন্ন কনটেন্ট দিতে হবে।
ছোট চ্যানেল দিয়েই শুরু হয় বড় যাত্রা। ধৈর্য, নিয়মিত ভিডিও, আর ইউটিউবের নিয়ম মানলেই আপনি সফল হতে পারবেন। তাই এখনই প্ল্যান শুরু করুন, ইউটিউবকে করে তুলুন আপনার আয়ের একটি সম্ভাবনাময় মাধ্যম।