রাজধানীর তেজগাঁও থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তামান্না নুসরাত বুবলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বিশেষ অভিযানে তাকে আটক করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন খান। পরে আদালতের নির্দেশে বুবলীকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে পাকা রাস্তায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে মিছিল করার জন্য সমবেত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করলে ঘটনাস্থল থেকে ৮৮ জনকে আটক করা হয়।
পরবর্তীতে তদন্তের অগ্রগতিতে এই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে সাবেক এমপি তামান্না নুসরাত বুবলীসহ আরও ১২ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে বুবলীর পক্ষে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী তাহমিনা তাহেরীন মুমু। শুনানিতে তিনি বলেন, “মামলার ঘটনার সাথে এ আসামি জড়িত নন। হয়রানি করার উদ্দেশ্যে তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। এজাহারে তার নাম ছিল না, সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদে পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি নরসিংদী পৌরসভার সাবেক মেয়র লোকমান হোসেনের স্ত্রী এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য।”
তিনি আরও বলেন, সাবেক এমপি বুবলী জামিনে মুক্ত হলে পলাতক হবেন না। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই, তাই তিনি জামিন পাওয়ার অধিকারী।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
একই দিন কারাবিধি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির ডিভিশন পাওয়ার জন্য আবেদন করলে তেজগাঁও আমলী আদালতের বিচারক ওয়াহিদুজ্জামান তা মঞ্জুর করেন। আদালত কারা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। আইনজীবীরা উল্লেখ করেন, সাবেক এমপি হিসেবে এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন পাওয়ার অধিকার তার রয়েছে।
বুবলীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী তাহমিনা তাহেরীন মুমু, এডভোকেট নাছিমা বেগম, এডভোকেট লিটন মিয়া, এডভোকেট তাসলিমা জাহান পপি, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম এবং এডভোকেট শাহাবুদ্দিন। তারা জানান, জামিন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে শিগগিরই উচ্চ আদালতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।