দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে টানা বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে ৯ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক শ জন।
মালাক্কা প্রণালীতে গঠিত বিরল ক্রান্তীয় ঝড় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডজুড়ে বৃষ্টি ঝরিয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই ভয়াবহ পরিস্থিতি জলবায়ু সংকটের কারণে আরো প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৌসুমি বর্ষণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটি ট্রপিক্যাল ঝড়, যা গত কয়েক দিনে অঞ্চলের বহু এলাকা প্লাবিত করেছে। এর মাধ্যমে হাজারো মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার শ্রীলঙ্কায় সাইক্লোন ‘দিতওয়া’–এর আঘাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে রবিবার মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৩৩৪-এ দাঁড়িয়েছে। বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ, আর রাজধানী কলম্বোর নিম্নাঞ্চলের বড় অংশ পানির নিচে।
গত দুই দশকে ২০০৪ সালের ভয়াবহ সুনামির পর দেশটিতে এটি সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
সেই সুনামিতে প্রায় ৩১ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছিল।
দেশটির প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন এবং বলেছেন, আমরা আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও চ্যালেঞ্জিং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। অবশ্যই আমরা আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী একটি দেশ গড়ে তুলব।
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু সুমাত্রা দ্বীপেই ৪৪২ জন মারা গেছেন এবং ৪০২ জন এখনো নিখোঁজ।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছাতে এখনও হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ, যেখানে হাজারো মানুষ খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছাড়া আটকা রয়েছেন।
অন্যদিকে থাইল্যান্ডেও গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ১৬২ জন নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সরকার ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু করেছে। যারা পরিবারে সদস্য হারিয়েছেন, তাদের জন্য বিশেষ সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সরকারের বন্যা মোকাবিলায় সমালোচনা বাড়ছে এবং অব্যবস্থাপনার অভিযোগে দুই স্থানীয় কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মৌসুমি বর্ষণ দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা ডেকে আনে। তবে এ বছর একটি ট্রপিক্যাল ঝড় পরিস্থিতিকে আরো জটিল করেছে। ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ বছরের মৃত্যু সংখ্যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চগুলোর একটি।