৪ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার যুগান্তকারী বিগ বিউটিফুল বিলে স্বাক্ষর করেছেন। স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আইনে পরিনত হয়েছে তার বহুল আলোটিত এই কর ও ব্যয় সংক্রান্ত বিল। বিলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কর হ্রাস, ব্যয় পুনর্বিন্যাস এবং সীমান্ত নিরাপত্তায় নতুন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মাথার ওপর সামরিক জেট উড়ে যাওয়ার শব্দ আর শত শত সমর্থকের সামনে ট্রাম্প বিলটিতে স্বাক্ষর করেন। এর ঠিক এক দিন আগে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বিলটি অল্প ভোটের ব্যবধানে পাস করে।
স্বাক্ষর শেষে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আগে কখনো দেশের মানুষকে এত খুশি দেখিনি, কারণ এই বিল অনেক ধরনের মানুষের জন্য—সেনাবাহিনী, সাধারণ মানুষ আর বিভিন্ন ধরনের কর্মীদের জন্য করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকা জিতেছে, যেভাবে আগে কখনো জেতেনি।’
সে সঙ্গে তিনি হাউস স্পিকার মাইক জনসন এবং সিনেট লিডার জন থুনকে ধন্যবাদ জানান, যারা কংগ্রেসের দুই কক্ষে বিলটি পাশ করিয়েছেন।
এর আগে কংগ্রেসের রিপাবলিকান–নিয়ন্ত্রিত দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অল্প ব্যবধানে বিলটি পাস হয়। এতে বিলটির পক্ষে পড়ে ২১৮ ভোট, বিপক্ষে পড়ে ২১৪ ভোট। পরে এতে সই করেন স্পিকার মাইক জনসন। তারও আগে গত মঙ্গলবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিলটি কোনো রকম উতরে যায়। সিনেটে বিলটি ৫১-৫০ ভোটে পাস হয়। বিলটি নিয়ে ট্রাম্পের নিজ দলেও প্রবল বিরোধিতা ছিল
তবে, এই বিল পাশ হওয়াকে ট্রাম্প আর তার রিপাবলিকান দলের জন্য বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। তারা বলছেন, এটা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। যদিও এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই বিল দেশের ঋণ আরও ৩ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়াবে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন এটা গুরুত্ব দেয়নি।
ট্রাম্পের দলের কিছু আইনপ্রণেতা বিলটির খরচ ও স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রামে প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রিপাবলিকান পার্টির অনেকের শঙ্কা, এ বিলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ অনেক বাড়বে এবং স্বাস্থ্য ও কল্যাণ খাতে বড় কাটছাঁট করতে হবে।
এদিকে ডেমোক্র্যাটিক নেতা হাকিম জেফ্রিস এই বিলের সমালোচনা করে বলেন, এটি ধনীদের জন্য উপহার, আর গরিবদের জন্য ক্ষতি। নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের থেকে সরকারি স্বাস্থ্য বীমা ও খাদ্য সহায়তার সুবিধা কেড়ে নেবে।
মার্কিন ধনকুবের, স্পেস এক্সের প্রধান ইলন মাস্ক এই বিলের ঘোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন এই বিল আমেরিকাকে দেউলিয়া করে দেবে।
এই বিল পাস হওয়া পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন ইলন মাস্ক। দলের নাম দেন আমেরিকা পার্টি।