চুয়াডাঙ্গায় অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর পায়ুপথের গুরুত্বপূর্ণ নালি কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার ক্লিনিক মালিক ও চিকিৎসকসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে রোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায়।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগীর বাবা নজরুল ইসলাম।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন—দেশ ক্লিনিকের পরিচালক হাসিবুল হক শান্ত, ক্লিনিকের ম্যানেজার ইয়াকুব আলী, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান এবং সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. এহসানুল হক তন্ময়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১২ জুন চুয়াডাঙ্গা শহরের হাসপাতাল রোডের দেশ ক্লিনিকে আলমডাঙ্গার রামনগর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মিনারুল ইসলামের অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন করা হয়। অপারেশনের দুই দিন পর বাড়ি ফিরে গেলেও তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। পরবর্তীতে তাকে আবারও ঐ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে যথাযথ চিকিৎসা না হওয়ায় স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নেওয়ার চেষ্টা করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়।
বাধা উপেক্ষা করে ৪ আগস্ট স্বজনদের সহায়তায় মিনারুলকে ঢাকার ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত করেন, অপারেশনের সময় রোগীর পায়ুপথের নালি কেটে ফেলা হয়েছে। এরপর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভুল অপারেশনের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারকে প্রথমে এক লাখ এবং পরে দুই লাখ টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে আইনের আশ্রয় নেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে দেশ ক্লিনিকের পরিচালক হাসিবুল হক শান্ত বলেন, “রোগীকে সঠিক চিকিৎসাই দেওয়া হয়েছে। ভুল অপারেশন হলে দুই-এক দিনের মধ্যেই জটিলতা দেখা দিত। চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন, রোগীর বমির কারণে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের নাড়ির বাঁধন খুলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।”
চুয়াডাঙ্গার স্বাস্থ্যখাত ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় এই ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। চিকিৎসকদের চিকিৎসা পদ্ধতি ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার কারণে রোগীর জীবন বিপন্ন হওয়ার ঘটনায় স্বজনরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন।