আজ ১০ ডিসেম্বর সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। মানবাধিকার সুরক্ষায় জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা ও স্বাধীনতার বিচারে বাংলাদেশ এখনো নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অব ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইনস্টিটিউশনসের (জিএএনএইচআরআই) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান ‘বি’ ক্যাটাগরিতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবাধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ ২০০৯ সালে একটি কমিশন গঠন করলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে সেটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। কমিশন পরিণত হয়েছে এক নামসর্বস্ব অধিকার সুরক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও নেপালেরও নিচে বাংলাদেশের অবস্থান। এমনকি পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তিমুরও রয়েছে বাংলাদেশের ওপরে।
১৯৯৮ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সূচক প্রণয়ন করে আসছে জিএএনএইচআরআই। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন শুরু হয় এবং তখন থেকেই কমিশনটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আটকে আছে। ২০১৫ সালে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হওয়ার আবেদন করা হলেও ‘প্যারিস নীতিমালা’র শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় তা খারিজ হয়ে যায়।
কমিশনের দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থা সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, প্যারিস নীতিমালার শর্ত পূরণ না হওয়ায় বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। এর পেছনে কমিশনের নিজস্ব ভবন না থাকা ও আর্থিক স্বাধীনতার অভাব অন্যতম কারিগরি কারণ। তবে মূল সংকট ছিল আইনি ও কাঠামোগত।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আগের আইনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি তদন্ত করার কোনো এখতিয়ার কমিশনের ছিল না। কমিশন কেবল সরকারের কাছে প্রতিবেদন চাইতে পারত, যা মানতে সরকার বাধ্য ছিল না। কমিশনের হাতে কোনো নির্বাহী বা বিচারিক ক্ষমতাও ছিল না।’