কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল। তলদেশে দুইটি টিউব স্থাপনের কাজ শেষে স্বপ্নের কর্ণফুলী টানেল রূপ নিচ্ছে বাস্তবে , পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে আনোয়ারা প্রান্তের সংযোগ সড়ক। চার লাইনের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক প্রস্তুতের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
টানেলের প্রবেশ মুখ সিইউএফএল রাঙ্গাদিয়া পয়েন্ট থেকে শাহাদাত নগর জেলেঘাটা পর্যন্ত ৭২৭ মিটারের একটি ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হয়েছে। সেখান থেকে পিএবি সড়কের চাতরী চৌমুহনী বাজারের দক্ষিণ দিক পর্যন্ত চার কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। নদীর উত্তরপাড় পতেঙ্গা প্রান্তেও ৫৫০ মিটার সংযোগ সড়ক এখন দৃশ্যমান, যা টানেলকে চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোডের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আনোয়ারা প্রান্তের সিইউএফএল পয়েন্ট থেকে পিএবি সড়কের চাতরী চৌমুহনী বাজারের দক্ষিণ পাশ পর্যন্ত চার লাইনের চার কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। দীর্ঘদিন দুইপাশে বালি ভরাট ও কালভার্ট নির্মাণ শেষে বর্তমানে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। পাশাপাশি সড়কের দুপাশে ড্রেন নির্মাণেরও কাজ চলছে। টানেলের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা গাড়ি নিয়ে ছুটে আসছে। ঘুরে ঘুরে দর্শনার্থীরা টানেলের কর্মযজ্ঞ দেখছেন।
দক্ষিণ বন্দর এলাকায় দেখা যায়, টানেলের সংযোগ সড়কের ডিজাইনে ত্রুটি হওয়ায় প্রায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে ৩টি নির্মাণাধীন কালভার্ট স্কেভেটর দিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য কালর্ভাটগুলো নির্মাণ করা হলেও ডিজাইনে ত্রুটি থাকায় এগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। কালভার্টগুলো নিচু হওয়ায় পানি চলাচল করতে পারছে না। বৃষ্টি হলে পানি সড়কের ওপর জমে থাকছে। স্থানীয় লোকজন চলাফেরা করতে পারছে না। কালভার্টগুলো ভেঙ্গে নতুন করে পুনরায় উঁচু করে নির্মাণ করা হবে।
এদিকে টানেলের সংযোগ সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে কর্ণফুলীর শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার ছয় লাইন সড়কের কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। সড়কের দুইপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বালি ভরাট ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। টানেলের সঙ্গে শেষ হবে এ সড়ক নির্মাণের কাজও।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, শিকলবাহা থেকে কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হলেও জুলাই মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়ে কাজ এগোচ্ছে।
টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানান, পুরো প্রকল্পের প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম টিউবের লিন স্ল্যাব স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। ডিসেম্বরের পর শুরু হবে দ্বিতীয় টিউবের লিন স্ল্যাব বসানোর কাজ। এ কাজ শেষ হলে ফিনিশিং কাজে হাত দেয়া হবে। পাশাপাশি চলবে প্রয়োজনীয় লাইটিং, অক্সিজেন সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় বিউটিফিকেশন কাজ।