ইসরায়েলের সঙ্গে রেকর্ড ৩৫ বিলিয়ন ডলার বা ৪ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার গ্যাস চুক্তি করেছে আরবের অন্যতম মুসলিম প্রধান দেশ মিশর। এই চুক্তি ইসরায়েলের জ্বালানির ওপর মিশরের নির্ভরতা আরও গভীর করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের লেভিয়াথান গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস আমদানি প্রায় তিনগুণ বাড়িয়েছে মিশর, যা ইসরায়েলের ইতিহাসে বৃহত্তম রপ্তানি চুক্তি।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ইসরায়েলি জ্বালানি কোম্পানি নিউমেডের ঘোষণা অনুযায়ী, এই চুক্তিতে ২০৪০ সাল পর্যন্ত লেভিয়াথান অফশোর ক্ষেত্র থেকে ১৩০ বিলিয়ন ঘনমিটার (বিসিএম) মূল্যের গ্যাস পাইপলাইনে সরবরাহ করা হবে মিশরে।
ইসরায়েলি কোম্পানি রেশিও এবং শেভরনের সঙ্গে নিউমেড এই ক্ষেত্রের তিনটি সহ-মালিকের মধ্যে একটি। এটি গ্যাস রিজার্ভারের ৪৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ ধারণ করে।
২০১৮ সালে মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তির এটি একটি উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ। এর ফলে প্রতি বছর ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস মিশরে সরবরাহ করা হয়। যদিও ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল বারবার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
নতুন চুক্তিটি ইসরায়েলের ওপর মিশরের জ্বালানি নির্ভরতা আরও গভীর করবে, কারণ গত তিন বছরে নিজস্ব গ্যাস উৎপাদনে ধস নেমেছে মিশরের। এর মধ্যে ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে আমদানি বাড়িয়েছে কায়রো। গত দুই গ্রীষ্মে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে মিশরের জ্বালানি ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে জনসাধারণের মাঝে।
এমন পরিস্থিতিতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাড়িয়ে এই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করে আসছে সরকার। জয়েন্ট অর্গানাইজেশনস ডেটা ইনিশিয়েটিভের মতে, বর্তমানে মিশরের গ্যাস ব্যবহারের ১৫-২০ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে ইসরায়েল।
নিউমেডের সিইও ইয়োসি আবু এই চুক্তিকে "উইন-উইন চুক্তি" বলে প্রশংসা করেছেন যা মিশরের জন্য এলএনজি আমদানির তুলনায় "অসাধারণ অর্থ" সাশ্রয় করবে। নতুন চুক্তির অধীনে, মিশর প্রতি বিসিএম প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলার বেশি দেবে, যা পূর্ববর্তী চুক্তির চেয়ে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
গাজায় ইসরায়েলের অবরোধে কায়রোর জড়িত থাকার অভিযোগে জনসাধারণের ক্ষোভের মধ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি-আরোপিত অনাহারে মারা গেছেন।