সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে বাগেরহাটে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এ হরতাল কার্যকর হয়, যা বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত চলবে। এই কর্মসূচি পালন করছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
হরতালের কারণে সকাল থেকেই জেলায় দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে জরুরি সেবা ও ওষুধের দোকান খোলা দেখা গেছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকালে অফিসে যাবো বলে বের হয়েছি। কিন্তু কোনো বাস নেই। ইজিবাইকে সাধারণত ২০ টাকা ভাড়া হলেও আজ দিতে হলো ৫০ টাকা। প্রতিদিনই যদি এভাবে বাড়তি খরচ হয়, তাহলে চলা কঠিন হয়ে যাবে।
এদিকে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা নির্বাচন অফিস ও জজ আদালতের সামনে কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা লক্ষ্য করা গেছে।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ সালাম বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ বাগেরহাটবাসীর সঙ্গে প্রতারণার শামিল। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৩০ জুলাই প্রাথমিক পর্যায়ে ঘোষণার পরই বাগেরহাটের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়। একই দাবিতে বুধবার ও বৃহস্পতিবারও সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
এম এ সালাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার যদি আমাদের আসন ফিরিয়ে না দেয়, তবে এর থেকে আরও কঠোর ও লাগাতার হরতাল কর্মসূচি দেয়া হবে।’
বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেছেন, নির্বাচন কমিশনারের ‘কোন লাভ নাই’ মন্তব্য ধৃষ্টতার শামিল। বাগেরহাটের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং এখানকার সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া বিবেচনা করে অবিলম্বে আসন ফিরিয়ে দিতে হবে।
চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি আসন কমিয়ে গেজেট প্রকাশ করে। এর প্রতিবাদে গত সোমবার সকাল সন্ধ্যা হরতালের পর বুধবার-বৃহস্পতিবার আবারও হরতালের ডাক দেয় সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
এর আগে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশনার বাগেরহাটের রামপাল মোংলা নিয়ে গঠিত ৩ আসন বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেয়।