স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে ডাকা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চলছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হলেও মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে এই দুই সড়কে সীমিত পরিসরে যান চলাচল করতে দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো অবরোধের কারণে অচল অবস্থায় রয়েছে।
আজ সকাল থেকে খাগড়াছড়ি শহর, শহরতলী ও গুইমারার অধিকাংশ দোকান খোলেনি। সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খাগড়াছড়ি শহরে কিছু ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করছে। তবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়াকড়ির কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
এদিকে, খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা বহাল আছে। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসলে নির্দেশনা তুলে নেওয়া হবে।
গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী জানান, গত রবিবার জেলার গুইমারায় সহিংসতায় নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতের মধ্যে দাহক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তোরণে কাজ চলছে।
বিজিবির খাগড়াছড়ি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, “খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তরণে বিজিবি বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছে। উদ্ভুত অবস্থা যাতে অবনতি না ঘটে সেজন্য ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।”
গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় গুইমারা উপজেলায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’-এর ব্যানারে ডাকা অবরোধের মধ্যে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়।