রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) ভর্তি কার্যক্রম আপাতত স্থগিত থাকবে। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে আয়োজনের জন্য কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) পোষ্য কোটাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের ধ্বস্তাধস্তির ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়াও গতকাল পোষ্য কোটাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের ধ্বস্তাধস্তির ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং রাকসু নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে আয়োজনের জন্য কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন।
ইফতেখারুল আলম মাসউদ বলেন, ‘গতকাল পোষ্য কোটাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের ধ্বস্তাধস্তির ঘটনায় একটি পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি এবং একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পোষ্য কোটা ভর্তি আপাতত স্থগিত থাকবে। এ বিষয়ে সিন্ডিকেটে রিপোর্ট করা হয়েছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল বডির সঙ্গে আলোচনা শেষে অচিরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এ ছাড়া, সিন্ডিকেট থেকে যথাসময়ে রাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হচ্ছে।’
এদিকে, গতকাল পোষ্য কোটা নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের দ্বারা শিক্ষক লাঞ্ছিনার অভিযোগে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় না নিয়ে আসা পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (রাকসু) সকল কার্যক্রম এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জরুরি একাডেমিক সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সাবেক সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতারা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। এদিন রাত ১১টা পর্যন্ত আন্দোলন চালান তারা। পরদিন শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন কয়েক শিক্ষার্থী। রাতভর আমরণ অনশনের পর বিকেল সাড়ে ৩টায় তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন। এ সময় তারা উপ-উপাচার্যের গাড়ি আটকায় এবং সেখানে টাকা ছুড়ে মারেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর তারা উপ-উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এতে তিনি তার বাসভবনে প্রবেশ করতে না পারায় প্রক্টর মাহবুবর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে আবারও শিক্ষার্থীদের বাধার সম্মুখীন হয়। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, উপ-উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি হয়। এরপর কয়েকঘন্টা অবরুদ্ধ থাকেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার ইফতেখার আলম মাসউদ, প্রক্টর মাহবুবুর রহমান, রাকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এনামুল হকসহ আরও অনেকে।
রাতভর এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে রাত পৌনে দুটায় পোষ্য কোটার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব এবং আজ জরুরি সিন্ডিকেট সভায় তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশ্বাস দেন। এরপর কর্মসূচি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৩ টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।