কোনো কারণে কোনো কারণেই ফেরানো গেলোনা তাকে, ফেরানো গেলোনা কিছুতেই.. সে যে হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে হারিয়ে গেল নিমিষেই’- গানের কথাগুলোর মতোই হারিয়ে গেলেন কণ্ঠশিল্পী খালিদ।
চাইম ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৮ মার্চ। গত বছর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে’, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’র মতো জনপ্রিয় গানের এই শিল্পী।
কয়েক বছর ধরেই হৃদ্রোগে ভুগছিলেন খালিদ; একাধিকবার হৃদ্রোগের চিকিৎসা নেন তিনি। তাঁর হৃদ্যন্ত্রে একটি স্টেন্ট বসানো ছিল। সেদিন সন্ধ্যায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালিদকে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
গোপালগঞ্জে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী ১৯৮১ সালে গানের জগতে যাত্রা করেন। ১৯৮৩ সালে যোগ দেন ‘চাইম’ ব্যান্ডে। তিনি চাইম ব্যান্ডের ভোকালিস্ট হিসেবে জনপ্রিয়তা পান।
খালিদের অধিকাংশ জনপ্রিয় গানের গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদ। খালিদ ও প্রিন্সের যুগলবন্দীতে কয়েক দশকে বাংলা গান সমৃদ্ধ হয়েছে একের পর এক হৃদয়ছোঁয়া সৃষ্টিতে। ১৯৯৪ সালে প্রিন্স মাহমুদের সুরে খালিদের প্রথম গান ‘আবার দেখা হবে’। এরপর ১৯৯৫ সালের শেষ দিকে ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’। ১৯৯৬ সালে ‘১১ জন’ অ্যালবামে ‘যতটা মেঘ হলে’। এরপর আসে ১৯৯৭ সালে ‘ঘৃণা’ অ্যালবামে ‘নীরা ক্ষমা করো’। ১৯৯৮ সালে শেষ ‘দেখা’ অ্যালবামে ‘আকাশনীলা তুমি বলো কীভাবে’। এগুলো জনপ্রিয়তা পেলেও সব ছাড়িয়ে যায় ১৯৯৯ সালে ‘এখনো দুচোখে বন্যা’ অ্যালবামের গান ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না ’।
এরপর ১৯৯৯ সালের শেষ দিকে আসে ‘দাগ থেকে যায়’ অ্যালবামে ‘হয়নি যাবার বেলা’। ২০০৬ সালে মিক্সড অ্যালবাম ‘দেবী’–তে আসে ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’। গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ২০০৮ সালে প্রকাশ পায় একক অ্যালবাম ‘ঘুমাও’। অ্যালবামটি খালিদের ক্যারিয়ারে এক মাইলফলক। তবে এ অ্যালবামের পর থেকেই সংগীতে সেভাবে আর পাওয়া যায়নি খালিদকে। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তিনি বেছে নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসজীবন।