বাংলাদেশ থেকে অস্কারের বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম বিভাগে পাঠানোর জন্য জমা পড়েছে পাঁচটি সিনেমা। এর মধ্য থেকে একটি সিনেমাকে চূড়ান্ত করে অস্কারে পাঠাবে অস্কার বাংলাদেশ কমিটি।
৯৮তম অস্কারে সেরা আন্তর্জাতিক ভাষার সিনেমা বিভাগে পাঠানোর জন্য এ মাসের শুরুর দিকে ছবি আহ্বান করে বাংলাদেশের অস্কার কমিটি। ১৬ সেপ্টেম্বর ছিল সিনেমা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। নির্ধারিত সময়ে জমা পড়ে মাত্র ৫টি সিনেমা- ‘ময়না’, বাড়ির নাম শাহানা’, ‘নকশিকাঁথার জমিন’, ‘প্রিয় মালতী ও ‘সাবা’।
এর মধ্যে ‘প্রিয় মালতী ও ‘সাবা’- এই দুটি ছবিই জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত। প্রিয় মালতী গত বছরের ডিসেম্বরে মুক্তি পেলেও ‘সাবা’ এখনো মুক্তি যায়নি দেশের প্রেক্ষাগৃহে। তবে তার জন্য দর্শককে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। আগামী শুক্রবার অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর ছবিটি দেশের বিভিন্ন সিনেমা হলে দেখা যাবে। আর আগামী ১৫ মার্চ বসবে ৯৮তম অস্কারের আসর।
সিনেমায় তুলে ধরা হয়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারের এক অসুস্থ মায়ের সেবায় নিয়োজিত এক তরুণীর গল্প। যেখানে মেয়ের চরিত্রে (সাবা) অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। ও মায়ের (শিরিন) চরিত্রে অভিনয় করেছেন রোকেয়া প্রাচী। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে এতে আরও অভিনয় করেছেনস মোস্তফা মনোয়ার।
‘প্রিয় মালতী’ আগে মুক্তি পেলেও মেহজাবীন অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘সাবা’। সিনেমাটি গত এক বছরে ডজনখানেক বিশ্বনন্দিত চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে প্রদর্শীত ও প্রশংসিত হয়েছে। গেল বছর সেপ্টেম্বরে ৪৯তম টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (টিআইএফএফ)-এ হয় ‘সাবা’র বিশ্ব প্রিমিয়ার। এরপর জেদ্দার রেড সি, গথেনবার্গ, সিডনি, রেইনডান্সসহ আরও অনেক উৎসবে অংশ নিয়েছে সিনেমাটি।
সিনেমা প্রসঙ্গে নির্মাতা জানান, ‘সাবা’ ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ৪, অস্ট্রেলিয়ার এসবিএস এবং কাজাখস্তানের অলটারনাটিভা ডেজ-এ বিক্রি হয়েছে। সিনেমাটি বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হওয়ার পর বাংলাদেশে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাচ্ছে।
সিনেমাটি নির্মাণ প্রসঙ্গে নির্মাতা মাকসুদ হোসেন আরও বলেন, ‘প্রায় পঁচিশ বছর আগে ঢাকায় আমার স্ত্রী ত্রিলোরা খান ও তার মা এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। সেই দুর্ঘটনার পর থেকে ত্রিলোরার মা হুইলচেয়ারে বসা একজন প্যারাপ্লেজিক, প্রতিদিনের যত্নের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করতেন ত্রিলোরা আর তার বাবার ওপর।’
মাকসুদ হোসেন আরও বলেন, ত্রিলোরার বাবার মৃত্যুর পর আমি কাছ থেকে দেখেছি, যথেষ্ট টাকা, ২৪ ঘণ্টা নার্সিং সাপোর্ট আর পরিবার পাশে থাকলেও ত্রিলোরার জন্য মাকে সামলানো কতটা কঠিন ছিল। সেখান থেকেই আমার মাথায় আসে— যদি এমন এক তরুণীর গল্প বলা যায় যার নাম সাবা, যে ঢাকার নিম্ন-মধ্যবিত্ত জীবনে কোনো সাহায্য, টাকা বা পরিবার ছাড়াই মাকে বাঁচিয়ে রাখতে লড়ছে? সেই কল্পনা থেকেই তৈরি আমাদের পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সাবা’।