পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলঙ্কা উচ্চ বিদ্যালয়ের সড়কের পাশে গাছ কাটা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (০৮ আগস্ট) ভোরে গাছ কাটার সময় বিষয়টি জানাজানি হয়।
এক পক্ষ বলছে, স্কুল কর্তৃপক্ষ কাউকে না জানিয়ে গাছ বিক্রি করে দিয়েছে। আর স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, গাছ বিক্রি করা হয়নি। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভায় রেজুলেশন পাশ করে স্কুলের প্রয়োজনে গাছ কাটা হচ্ছে। তবে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে গাছ কাটার অনুমতি নেওয়া হয়নি।
শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের সামনে রাস্তার পাশে একটি মেহগনি ও একটি কাঁঠাল গাছের গোড়া কাটা। স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম মিলন, আজিম উদ্দিন, জিয়াউর রহমান জিয়া, সাবেক মেম্বার আব্দুল হাকিমের অভিযোগ, শুক্রবার ভোররাতে হঠাৎ করেই আটলঙ্কা উচ্চ বিদ্যালয়ের সড়কের পাশে একটি মেহগনি ও একটি কাঁঠাল গাছ কাটা শুরু করে কয়েকজন শ্রমিক। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে গাছ কাটায় বাধা দেন। পরে তারা জানতে পারেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির (এডহক কমিটি) সভাপতি আশরাফুল ইসলাম হারেজ স্থানীয় খড়ি ব্যবসায়ী ও এডহক কমিটির সদস্য সাইদুল ইসলামের কাছে গাছগুলো বিক্রি করেছেন। পরে তারা বিষয়টি মোবাইল ফোনে ইউএনও কে জানালে তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষকে গাছ কাটতে নিষেধ করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতীন বলেন, 'স্কুলের শ্রেণীকক্ষ সংকট রয়েছে। একটি টিনের ঘর ভেঙ্গে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। সেটি সেখান থেকে সরিয়ে সামনের দিকে নিয়ে আসা খুব দরকার। এমন অবস্থায় পরিচালনা কমিটির সভায় রেজুলেশন করে স্কুলের একটি ঘর তোলার কাজে ব্যবহারের জন্য গাছ দুটি কাটার অনুমোদন করা হয়।'
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির (এডহক কমিটি) সভাপতি আশরাফুল ইসলাম হারেজ বলেন. 'গাছগুলো স্কুলের, সরকারি নয়। আর গাছ বিক্রি করা হয়নি। স্কুলের একটি ঘর নতুন করে তোলার জন্য কাঠের প্রয়োজন। এলাকাবাসী, স্কুল পরিচালনা কমিটির সব সদস্য মিলে অনুমোদন নিয়েই গাছ দুটি কাটা হচ্ছিল। কিন্তু কিছু লোক আমাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। তারা বাধা দিয়েছে। আমরা রেজুলেশন নিয়ে ইতিপূর্বে কয়েকদফা ইউএনও সাহেবের কাছে গিয়ে গাছ কাটার অনুমোদন নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি সময় না পাওয়ায় তাকে মৌখিকভাবে জানিয়ে রাখা হয়েছে।'
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, 'আটলঙ্কা উচ্চ বিদ্যালয়ের গাছ কাটার বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অনুমোদন নেয়নি। এলাকাবাসী ফোন করে আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি স্কুল কর্তৃপক্ষকে গাছ কাটা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছি। গাছ কাটার বিষয়ে একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। গাছগুলো সরকারি না স্কুলের সেটি যাচাই করে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তবেই গাছ কাটার অনুেমোদন দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।'