ফেনীতে দিন দিন বাড়ছে পেয়ারার বাণিজ্যিক আবাদ। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এই ফল এখন অনাবাদি ও এক ফসলি জমিতে কৃষকের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনছে।
কৃষি বিভাগও বলছে, এ অঞ্চলের মাটি ফলটির চাষাবাদের জন্য উপযোগী। ফেনী শহরতলির কালিদাস পাহালিয়া নদীর তীরে বিস্তীর্ণ সবুজে গড়ে উঠেছে ‘পাহালিয়া এগ্রোর পেয়ারা বাগান। ৭ একর জমিতে রোপণ করা হয়েছে ৪ হাজার ২০০টি উন্নত জাতের পেয়ারা গাছ। ফলনও আসছে আশানুরূপ।
বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতি গাছ থেকে বছরে ৭০ থেকে ৮০ কেজি পেয়ারা উৎপাদিত হয়। সে হিসেবে এই বাগান থেকে বছরে প্রায় ২৯৪ টন পেয়ারা পাওয়া যায়।
বর্তমান বাজারদরে প্রতি কেজি ৫০ টাকা হিসেবে এর বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। খরচ বাদ দিয়েও বছরে ১ কোটির বেশি টাকা লাভ হিসেবে থাকছে কৃষকের খাতায়।
ফেনী সদরের কালিদহ এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তৈয়ব বলেন, উন্নত জাতের এসব পেয়ারা বারোমাসি এবং ভালো ফলন দেয়। ফলে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন সবুজ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ এই ফলটির আবাদে।
ফেনীর সীমান্তবর্তী ধর্মপুরের ‘জান্নাত এগ্রোতেও এমন সম্ভাবনার চিত্র দেখা গেছে। সেখানে ৩ একর জমিতে ৭৫০টির বেশি গাছে পেয়ারা ফলছে। বছরে গড় আয় প্রায় ১২ লাখ টাকা।
বাগানিরা বলছেন, সম্ভাবনা এতটাই বেশি যে বাগান সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও নিচ্ছেন তারা। তাজা ফল কিনতে অনেকেই সরাসরি বাগানে চলে আসছেন।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, ফেনীর মাটি পেয়ারার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। আগে মিশ্র ফলবাগানে দু-একটি পেয়ারা গাছ দেখা গেলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে আলাদা বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে।
জেলায় বারি পেয়ারা-০৩, বাউ পেয়ারা-০৩ ও ০৫, থাই পেয়ারাসহ বিভিন্ন জাতের পেয়ারা চাষ হচ্ছে।
সারা জেলায় বর্তমানে ১৮০ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ হচ্ছে। বছরে উৎপাদন প্রায় ১৮০০ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য প্রায় ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ফেনীর অতিরিক্ত পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মো. জগলুল হায়দার বলেন, মাটির গুণগত মানের কারণে ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চলে পেয়ারার ভালো ফলন হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবেও চাষাবাদ বেড়েছে। ফলটির আবাদ বাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষক ও উদ্যোক্তাদের পরামর্শসহ যাবতীয় সহায়তা দিচ্ছে। এক ফসলি ও অনাবাদি জমিগুলোতে পেয়ারার চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষকের সুদিন ফিরবে।