রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১২ বছর আজ। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ধসে পড়েছিল সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত রানা প্লাজা।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৬ জন শ্রমজীবী। আহত হন আরও প্রায় দুই হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে সাভারে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। দিনটিতে ছুটে আসেন নিহতের স্বজন ও আহতরা।
যেদিন রানা প্লাজা ভেঙ্গে পড়ে তার আগের দিনই ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। আর সেই ফাটল অগ্রাহ্য করেই পরের দিন ভবনটির পাঁচটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের কাজে ফিরতে বাধ্য করা হয়।
নিহত শ্রমিকদের স্মরণে পোশাক শিল্পে শোক দিবস ঘোষণা, রানা প্লাজার সামনে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের এক জীবনের ক্ষতিপূরণসহ নানা দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মোমবাতি প্রজ্বলন করেছেন হতাহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
ইতিহাসের সর্ববৃহৎ এই শিল্প দুর্ঘটনার পাঁচদিন পর ২৯ এপ্রিল ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে সোহেল রানাকে যশোরের বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এ ঘটনায় সেই সময় মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে অবহেলার কারণে মৃত্যু উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ, ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় একটি মামলা করে রাজউক এবং ভবন নির্মাণে দুর্নীতি ও সম্পদের তথ্য গোপন সংক্রান্ত দুটি মামলা করে দুদক। দীর্ঘ ১২ বছরে চারটি মামলার মধ্যে সম্পদের তথ্য গোপনের মামলা নিষ্পত্তি হলেও বাকি মামলাগুলো নিষ্পত্তির মুখ দেখছে না।
হত্যা মামলায় ৫৯৪ জনকে সাক্ষীর মধ্যে ৯৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে কবে এ মামলার বিচার শেষ হতে পারে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এছাড়া উচ্চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে ইমারত বিধি না মেনে ভবন তৈরির মামলার কার্যক্রম। স্থগিতাদেশের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও হাকিম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ আর শুরু হয়নি।
বিশ্বের ভয়াবহতম শিল্প দুর্যোগের একটি হিসেবে এরই মধ্যে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে ওই ভবন-ধসের ঘটনা।