ছেলের বউ মানে দুটি মেয়ের প্রাপ্য স্নেহ এবং সর্বোচ্চ ভালোবাসার হকদার

জগৎ সংসদে হাঁটি হাঁটি পা পা করে কখন আমরা শিশু-কিশোর থেকে যৌবনে পদার্পণ করেছি, ভাবতে কেমন জানি অবাক লাগে। আমরা যখন শিশু ছিলাম তখন মা-বাবা তাদের শিশুকালের অনেক গল্প বলতেন। শুনে অবাক হতাম। কখনো ভাবতাম না আমরাও তাদের মতো একসময় বয়স্ক হব, বৃদ্ধ হব! জীবনের এই বহতা নদীতে অবগাহন করে কখন যে সেই বৃদ্ধের কাতারে নাম লিখে ফেলেছি, ভাবতে জানি কেমন কেমন লাগে! আবেগ, অনুভূতি, অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করে যখন ভাবি, আজকে আমি যে বয়সের, আমার বাবা-মা যা ভাবছেন, আমিও তো তা-ই ভাবছি! এই ভাবনাগুলো কখনো সুখকর হয়, আবার কখনো দুখের। একজন মানুষ পৃথিবীতে এলে তার নির্দিষ্ট একটি বয়সের পর, কাঁধে অনেক দায়িত্ব চলে আসে। লেখাপড়া, চাকরি-বাকরি এবং যৌবনের সুখকর বাস্তবতা বিবাহ। জীবন চলছে তো চলছেই, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা যোগফল!

এই যোগফলের এক মহাসন্ধিক্ষণ আপনি কখন ছেলে-মেয়ের বাবা হয়ে গেলেন! এই তো সেদিন বিয়ে করেছেন! আপনার শিশুটি পৃথিবীতে এসেছে। সে কোলে-পিঠে মানুষ হয়ে, কখন লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। বিয়ের উপযুক্ত হয়েছে, বিয়ে করিয়ে দিয়েছেন। কারও ঘরে কন্যাসন্তান নেই, ছেলেকে বিয়ে করিয়ে এনে পুত্রবধূকে কন্যাসন্তানের স্নেহ-ভালোবাসায় লালন করছেন। কন্যাসন্তানের অভাব গুছিয়েছেন। ভালোবাসার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ছেলের বউকে ছেলের বউ মনে না করে, নিজের মেয়ে মনে করেছেন। এই ভালোবাসা নিখাত। ছেলের বউ, সে তো দুটি পরিচয় পরিচিত। একদিকে মেয়ে, অপর দিকে ছেলের বউ। সে তো  দুটি মেয়ের স্নেহ, সম্মান ও ভালোবাসার মালিক হয়ে গেছে। হয়তো আপনার মেয়ে হলে, তার একমাত্র পরিচয় ছিল সে আপনার মেয়ে! এখন যেহেতু সে মেয়ে এবং ছেলের বউ, তার দুটি মহাশক্তিশালী পরিচয়ে সে সবার পরম স্নেহ, ভালোবাসা ও আদরের! এটা কি আমরা অনুবাদ করতে পারি। এই অনুভূতিতে একটি ছেলের বউকে কি আমরা লালন-পালন করি? অনেকে হয়তো করেন, আবার অনেক হয়তো করেন না। করতে হবে এবং করতে হয়। অনেক দায়িত্ববোধ। কারণ, তার মাঝে নিহিত রয়েছে আপনার ভবিষ্যৎ বংশধর! আপনি তাকে ভালোবাসবেন, স্নেহ করবেন - সে আপনাকে ভালোবাসতে, শ্রদ্ধা করতে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। তার জাত, পাত, গাত্র বর্ণ আপনার দেখার প্রয়োজন নেই। আপনার দেখার প্রয়োজন, আপনার দুটি শিশু সুখে আছে কি না। তাদের জীবন উপভোগ করতে দিন। শিশুকালে আপনি আপনার সন্তানের হাত যেভাবে ধরে হাঁটতে শিখিয়েছেন; আপনি যখন বৃদ্ধ হয়ে আবার শিশু হয়ে যাবেন - এই শিশুরা আপনার মা-বাবা সেজে আপনার হাত ধরিয়ে হাঁটাবে! কিন্তু এর জন্য কিছু প্রয়োজন আছে, আপনি তাদের কতটুকু ভালোবাসেন, কতটুকু স্নেহ করেন। সন্তান হিসেবে তাদের প্রাপ্য মর্যাদা কতটুকু দেন - এটার যোগফল তারা আপনাকে দেবে! অপর দিকে আপনি বা আপনারা আপনাদের মা-বাব, শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি কিরূপ আচরণ করেছেন, কতটুকু সম্মান-ভক্তি করেছেন, কতটুকু যত্নআত্তি করেছেন, সেটার পরিণতিও ছেলে-বউ দ্বারা পাবেন। তাই ছেলের বউকে ছেলের বউ মনে না করে, দুটো মেয়েসন্তানের সম্মান দিন। ছেলে এবং ছেলের বউ শত প্রতিকূল পরিবেশেও আপনাকে অবহেলা-অবজ্ঞা করবে না। জগতের সকল সন্তান থাকুক দুধে-ভাতে। 

লেখক-

খন্দকার মো. জসীম উদ্দিন 

সাংবাদিক, কলাম লেখক, সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রচিন্তক।


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিজয় দিবসে পতাকা হাতে প্যারাট্রুপিংয়ে বিশ্ব রেকর্ড বাংলাদেশের

পাকিস্তানে ৩ ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি রুপি লুট , নিহত ২

জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা

মহান বিজয় দিবস আজ

রাজনৈতিক ব্যক্তি ও এমপি প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের নীতিমালা প্রকাশ

নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো ইনশাআল্লাহ : তারেক রহমান

হাদির আক্রমণকারী চিহ্নিত, বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যাচার চলছে: মির্জা ফখরুল

ভোলায় জামায়াত-বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে ১০জন আহত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ৫ দিনের রিমান্ডে

১০

সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছে হাদিকে বহন করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

১১

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি পালন

১২