জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে হামলা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুরো দিনজুড়ে দফায় দফায় সংঘর্ষের জেরে সন্ধ্যায় সরকার ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে, যা রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে আজ (বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই) বিকেল ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এদিকে কারফিউয়ের মধ্যে যৌথবাহিনী বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে। তাদের গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান।
এদিকে চলমান কারফিউয়ে জেলায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল রাত থেকে সীমিত আকারে রিকশা চলাচল করলেও অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি, বন্ধ ছিল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হয়নি।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এখনো পর্যন্ত রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারে মানুষের আনাগোনা নেই বললেও চলে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। জেলা কারাগারের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এনসিপি’র ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে গতকাল বুধবার গোপালগঞ্জে ওই হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এই ঘটনায় চারজনজন নিহত এবং অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
গোপালগঞ্জে দিনভর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ইদ্রিস মোল্যার ছেলে সোহেল মোল্যা।
বুধবার গোপালগঞ্জে সভা শেষে ফেরার পথে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গাড়িবহরে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। এতে হামলাকারী ও পুলিশের মধ্যে দিনভর সংঘর্ষ চলে। এতে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।