জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে নির্বিচারে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাতে প্রাণ যায় শত শত মানুষের। আহত হন অনেকে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তদন্তে নেমে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পায় জাতিসংঘ।
প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, হত্যায় জড়িত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।
আন্দোলন দমানোর নামে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে। ১০ জুলাইয়ের পর এসব আলামত নষ্টের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহার।
তিনি বলেন, শুধু ডিলিট না, কথাও যেন কোন ডেটা না থাকে সেজন্যে স্থায়ীভাবে ডিলিট করার নির্দেশনাও আমরা তদন্তে পেয়েছি। সেসমস্ত জিনিস আমরা পুনরুদ্ধার করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে আদালতে প্রেরণযোগ্যের ব্যবস্থা করেছি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, হেগভিত্তিক আইসিসিতে এই মামলা পাঠানোর বিষয়টি সরকার গভীরভাবে বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি জটিল সিদ্ধান্ত। আমরা প্রোস ও কনস বিশ্লেষণ করছি। এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানতে পারবে বাংলাদেশে কী ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা চায় ন্যায়বিচার দৃশ্যমান হোক। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
আইসিসির প্রসিকিউশন টিম ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করছে।বেসরকারি এক টিভি চ্যানেলকে পাঠানো এক ইমেইলে তারা জানায়, বাংলাদেশ চাইলে মামলা প্রস্তুতিতে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত। আইসিসির এ উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক চাপের অংশ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত বিচার চাইলেও, রাজনৈতিক সংকট ও অভ্যন্তরীণ আইনি জটিলতা এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সরকারের কিছু মহল আইসিসিতে মামলা পাঠানোকে "সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন" হিসেবে দেখছেন। তবে ভুক্তভোগী পরিবার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে আদালতে প্রেরণের সম্ভাবনা এখনো উড়িয়ে দেওয়া যায় না।