নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে শত বছর ধরে পতিত থাকা জমিতে চাষ হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া। এসব পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলনও হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে হাওরাঞ্চলের পতিত জমিতে। দাম ভালো পাওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, হেক্টরপ্রতি মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১০ হাজার পিস। হেক্টরে ৩৫ মেট্রিক টন উৎপাদন হারে ২৫০ হেক্টরে প্রায় ৮ হাজার ৫০ মেট্রিক টন ফলন হয়েছে। যার বিক্রয়মূল্য এসেছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। খরচ বাদে কৃষকের আয় প্রায় সোয়া ৫ কোটি টাকা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয়রা জানায়, যুগের পর যুগ হাওরাঞ্চলে কয়েক হাজার হেক্টর সরকারি জমি পতিত ছিল। এসব জমিতে বর্ষায় থৈ থৈ পানি থাকে। শুকনো মৌসুমে পরিণত হয় গোচারণ ভূমিতে। এমন দৃশ্য হাওরবাসীর কাছে চির চেনা। কিন্তু ক’বছর ধরে ঘটেছে ব্যতিক্রম ঘটনা। জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের আবাদের আওতায় আনা হয়েছে এসব জমি। এখন বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘন সবুজের সমারোহ। মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি ফলছে বাদাম, ক্ষিরা, সূর্যমুখী, সরিষাসহ অনেক জাতের শাক-সবজি। কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় শতাধিক বেকার যুবকের। এক খণ্ড জমিতে চাষাবাদ করে দশগুণ লাভ করছেন চাষিরা।
খালিয়াজুরী উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক আলা উদ্দিন, কাশেম মিয়া, জয়নাল মিয়া জানান, পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করে প্রায় ৪ গুণ আয় হয়েছে। বছরের এই সময়টা কাজকর্ম থাকে না। বাড়ির আশেপাশে পতিত জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে মিষ্টি কুমড়া, বাদাম, ক্ষিরা, সূর্যমুখী, সরিষা আবাদ করেন তারা। এতে বোরো ফসলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভ হয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলার হাওরাঞ্চলে চাষের আওতায় এসেছে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর অনাবাদি জমি। সার, বীজ, কৃষি উপকরণসহ নিয়মিত তদারকি করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।