গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জৈবিক পদ্ধতিতে পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য কৃষক সমাবেশের মাধ্যমে পার্চিং উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন কৃষি মাঠে এ পার্চিং উৎসব আয়োজন করা হয়।
উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান।
এ সময় গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) মো. আবুল বাসার মিয়া, কৃষি প্রকৌশলী মো. শফিকুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিঠুন সরকার, এসএপিপিও ও সংশ্লিষ্ট ব্লকের এসএএওবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ পার্চিং উৎসবে কৃষকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশগ্রহণ করেন।
পরিদর্শনকালে কৃষি কর্মকর্তারা বস্তায় আদা চাষ, প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য এয়ার ফ্লো-মেশিন, বিসিআইসি সারের গুদাম ও বিন্নায় কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।
এ সময় তারা কৃষকদের দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ প্রদান করেন। এছাড়া খামারি অ্যাপসের মাধ্যমে সার প্রয়োগকৃত আমন ধানের ব্লক পর্যবেক্ষণ করেন এবং মাজরা পোকাসহ অন্যান্য ক্ষতিকর পোকা দমন নিয়ে আলোচনা করেন।
কৃষক জামাল শেখ বলেন, পার্চিং উৎসব তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাসায়নিক ওষুধ ব্যবহার করে আসছিলাম। এতে খরচ যেমন বাড়ছিল, তেমনি ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। পার্চিং উৎসবের মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে পোকা দমন করলে খরচও কমবে, আবার ফসলও সুস্থ থাকবে।
কৃষক শান্ত শেখ বলেন, আমরা আগে বুঝতাম না মাঠে শুকনো ডাল বা কাঠি গেঁড়ে রাখলে কী উপকার হয়। আজকের এই সমাবেশে শিখলাম যে এতে ক্ষতিকর পোকা পাখির খাদ্যে পরিণত হয় এবং ফসল নিরাপদ থাকে। এতে কীটনাশকের ব্যবহার অনেকটা কমে আসবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মামুনুর রহমান জানান, প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য। কৃষকদের সচেতনতার মাধ্যমে রাসায়নিকের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে পার্চিং উৎসবসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ ধরনের সমাবেশ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকরা প্রাকৃতিকভাবে পোকা নিয়ন্ত্রণে আরও উৎসাহিত হবেন এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসবেন।