ভারত-চীন এবং থাইল্যান্ড থেকে আনা কাঁচামাল দিয়ে মিয়ানমারের কারখানায় তৈরি হচ্ছে ভয়ংকর মাদক আইস। এরপর টেকনাফ সীমান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশে। বহনে সহজ ও লাভজনক হওয়ায় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আইস পাচারের দিকে ঝুঁকছে।
মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশে বাজারজাত করা পর্যন্ত সক্রিয় রয়েছে চারটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। র্যাব এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে আইস নিয়ে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।
বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২শ ৭০ কিলোমিটারের বেশি জল এবং স্থল সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে স্থলভাগের পুরোটাই দুর্গম হওয়ায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তেমন নজরে থাকে না। এ সুযোগে মিয়ানমারের ভেতরে গড়ে উঠছে শত শত মাদক তৈরির নানা কারখানা। এসব কারখানায় আগে শুধু ইয়াবা তৈরি হলেও এখন যুক্ত হয়েছে আইস নামের এক নতুন মাদক। ইয়াবার চেয়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আইস পাচারের সঙ্গে জড়িয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে র্যাব।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, আইসের যে মূল উপাদান সেটি আসে থাইল্যান্ড থেকে। পরে মিয়ানমারের বিভিন্ন কারখানায় এটি উৎপাদন হয়। এরপর এগুলো আমাদের দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বেশ কয়েকটি বড় বড় আইসের চালান ধরা পড়ে। এরপর এর বিপণন ব্যবস্থা নিয়ে অনুসন্ধানে নাম মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং র্যাব। বের হয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মিয়ানামারের সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাচারের পাশাপাশি বিক্রি করছে এ দেশের চারটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
ভয়ংকর এই মাদক তৈরি থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অন্তত ৫টি দেশের মাদক ব্যবসায়ীরা জড়িত। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ। এ অবস্হায় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জনমত সৃষ্টির কোনো বিকল্প দেখছেন না সমাজবিজ্ঞানীরা।
সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিশ্ব সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে মিয়ানমার এসব মাদকদ্রব্য উৎপান করতে বাধ্য হয়।
চলতি বছরেই ১০টির বেশি অভিযানে বাংলাদেশে অন্তত ২০ কেজি আইস জব্দ হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাদক বাজারে যার দাম একশো কোটি টাকার বেশি।